ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি জানিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করেছে ভাগলপুরের সাধারণ শিক্ষার্থী ও জনগণ
স্টাফ রিপোর্টারঃ ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে চলমান যুদ্ধে মাজলুম ফিলিস্তিনের পক্ষে ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি জানিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করেছে কিশোরগঞ্জ জেলা বাজিতপুর উপজেলার ভাগলপুরের সাধারণ শিক্ষার্থী ও জনগণেরা। বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) বাজিতপুর ইউথ সোসাইটির আয়োজনে ভাগলপুর স্টেশন থেকে শুরু হওয়া এ বিক্ষোভ মিছিল যোগ দেন শত শত সাধারণ শিক্ষার্থী ও জনগণ।
এ সময় সমাবেশে ফিলিস্তিনের পতাকা, ঐতিহ্যবাহী ফিলিস্তিনি পোশাক কেফিয়্যে, বিভিন্ন স্লোগান সম্বলিত ব্যানার ও ফেস্টুন নিয়ে শিক্ষার্থীদের সমাবেশ করেন এবং মিছিলে 'নারায়ে তাকবীর আল্লাহু আকবর', ‘লাব্বাইক লাব্বাইক, লাব্বাইক ইয়া আকসা’, ‘বয়কট বয়কট কোকাকোলা বয়কট’, ‘বয়কট বয়কট ইসরাইলি পণ্য বয়কট,’ ‘কোকাকোলা কে বিদায় দিন মুসলমানের পক্ষ নিন’, ‘ফিলিস্তিন মুক্তি পাক-ইসরায়েল নিপাত যাক’ 'ইসলামের শত্রুরা হুশিয়ার সাবধান' ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।
সংহতি জানিয়ে সোসাইটির সদস্য ইফরাত বলেন, শুধু ফিলিস্তিন নয় সকল মুসলিমের পক্ষে আমাদের অবস্থান। পশ্চিমদের জঙ্গি দোষারোপ পুরাতন অভ্যাস। ব্রিটিশদের জুলুমের বিরুদ্ধে বাঙালিরা যখন ঐক্যবদ্ধ হয়েছে তখনো তারা এমন খেলা খেলেছে। আমরা মজলুমদের পক্ষে ছিলাম আছি আগামীতেও থাকব। ফিলিস্তিনের জন্য সফলতা কামনা করছি। আজ আমরা মানবতার পক্ষে দাঁড়িয়েছি। ১৯৪৮ সাল থেকে তারা ফিলিস্তিনের উপর অত্যাচার নির্যাতন করে আসছে। এমনকি রোজার সময়েও তারা আক্রমণ করে নিজেদের শক্তিশালী প্রমান করতে চায়। মুসলিমদের সকল কিছুর বিরুদ্ধে এক সাথে কথা বলতে হবে। হামাস বৈধভাবে জনগণকে প্রশিক্ষণ দিয়ে সংগ্রাম করে যাচ্ছে। আমরা তাদের পাশে আছি। ঐতিহাসিকভাবে বাংলাদেশ ফিলিস্তিনের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। আমরা ফিলিস্তিনের পক্ষে পূর্ণ সংহতি জানাই এবং দোয়া করি।
আল ইসলাহ্ ইসলামী সংগঠন এর মহাসচিব ও আফতাব উদ্দিন স্কুল এ্যান্ড কলেজ এর শিক্ষার্থী মোঃ মোশিউর রহমান আতিক সমাবেশে বলেন, ফিলিস্তিনের এই সংঘাত জালেম এবং মজলুমের সংঘাত। শুধু ধর্মীয় আবেগ দিয়ে সকল সমস্যার সমাধান করা যায় না। আমাদের যুগোপযোগী ভাবে নিজেদের সকল কিছুর জন্য প্রস্তুত হতে হবে। যুক্তরাষ্ট্র ইজরাইলের প্রশ্নে ভীষণভাবে দোষী। পশ্চিমে আমার দীর্ঘদিন অবস্থানে তাদের আচরণ ও অভ্যাস সবই আমার ভাল করে জানা। আমি বলতে চাই ফিলিস্তিন ইস্যুতে আমাদের অবস্থান ন্যায় সংগত ও ন্যায্য। শুধু রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় নয় সারা দেশে এই বিষয়টি নিয়ে কথা হওয়া দরকার। ফিলিস্তিনের পক্ষে পৃথিবীর বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে যে সব শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করছে তাদের সাথে সংহতি জানাতে আমাদের আজকের এই প্রতিবাদ।
ফ্রি প্যালেস্টাইন ফ্রি প্যালেস্টাইন স্লোগানে ভাগলপুর স্টেশন থেকে শুরু হওয়া বিক্ষোভ মিছিল রশ্বি মার্কেট, আফতাব উদ্দিন স্কুল এন্ড কলেজ, জহিরুল ইসলাম মেডিকেল ও হাসপাতাল ও ঘুরে হটস স্পাইসি রেস্টুরেন্ট এর সামনে এসে শেষ হয়।
মিছিল শেষে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাজিতপুর ইয়থ সোসাইটির সদস্য ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
সমাবেশে আল ইসলাহ্ ইসলামী সংগঠন এর কোষাধ্যক্ষ ও বাজিতপুর ইয়থ সোসাইটির সদস্য হাসিবুর রহমান হাসিব বলেন, ইজরায়েলকে ফিলিস্তিনে হামলার সহায়তাকারী দেশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে আজ শিক্ষার্থীরা ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার আন্দোলন শুরু করেছে। সে আন্দোলন আজ বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে। আমরা আজকের এই সমাবেশ থেকে সেসব শিক্ষার্থীদের সাথে সংহতি প্রকাশ করছি।
তিনি আরও বলেন, যারা আমাদের গণতন্ত্রের সবক দেয়। যারা গণতন্ত্রের মোড়ল, যারা গণতন্ত্রের টেন্ডার নিয়েছে সারা জীবনের জন্য আজ তাদের মুখোশ উন্মোচন হয়ে গেছে।
বাজিতপুরী ইউথ সোসাইটির আয়োজনে এ সমাবেশে উপস্থাপনা করেন তানবীর ও ইফরাত ইসলাম অপু। এতে উপস্থিত ছিলেন ভাগলপুরের বিভিন্ন স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থী ও সাধারণ জনগণ।
উল্লেখ্য, মূলত গত ১৭ এপ্রিল থেকে যুক্তরাষ্ট্রের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফিলিস্তিনিদের পক্ষে ও ইজরায়েলের বিরুদ্ধে শুরু হওয়া এ আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে পৃথিবীর বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে। যুক্ত রাষ্ট্রের ৪০টি বিশ্ববিদ্যালয় ও যুক্তরাজ্য, জার্মানি, ফ্রান্স, কানাডা এবং অস্ট্রেলিয়াসহ পৃথিবী ব্যাপী ইসরায়েলবিরোধী আন্দোলনে যুক্ত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ ও শিক্ষার্থীরা।