জানাজার নামাজ আদায়ের পদ্ধতি কী? জানাজার নামাজ আদায়ের নিয়ম
আজকের এই আর্টিকেলে আমরা জানবো জানাজার নামাজ আদায়ের পদ্ধতি কী? জানাযার নামাজে কোন কাজটি করা আবশ্যক এবং কোনটি সুন্নত? জানাযার নামাজের দোয়া, নিয়ম, নিয়ত ও ফজিলত
ইসলামে মৃত ব্যক্তিকে দাফন করার আগে জানাজার নামাজ আদায় করা ফরজ করা হয়েছে। এটি আবশ্যক বিষয়। একটি আবশ্যক একটি বিধান মুসলিমদের জন্য।
‘প্রত্যেক প্রাণকে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতেই হবে।’ (সূরা: আল ইমরান, আয়াত ১৮৫)
জানাজার নামাজ আদায়ের নিয়ম হলো, ইমাম মৃত ব্যক্তির বুক বরাবর দাঁড়াবে। (বুখারি: ১২৪৬)। এটি সুন্নত।
ইমামের পেছনে মুক্তাদিদের কাতার হবে। (ইবনে হিব্বান: ৩১০২)
সবাই আল্লাহর ইবাদত হিসেবে জানাজার ফরজ আদায়ের নিয়ত করবে। (বুখারি: ১)
আর নামাজ দাঁড়িয়ে পড়তে হবে।
প্রথম তাকবিরে তাহরিমা বলবে এবং কান পর্যন্ত হাত ওঠাবে। এরপর সানা পড়বে। এরপর তাকবির বলে দরুদ পাঠ করবে। এই তাকবিরে হাত ওঠাবে না।
তারপর তৃতীয় তাকবির বলে মৃত ব্যক্তি ও মুসলমানদের জন্য দোয়া করবে। তখনো হাত ওঠাবে না। তারপর চতুর্থ তাকবির বলবে। তখনো হাত ওঠাবে না। (দারাকুতনি: ১৮৫৩)। এরপর ডান ও বাম দিকে সালাম ফেরাবে। (সুনানে কুবরা: ৭২৩৮) ইমাম তাকবির উচ্চ স্বরে বলবে এবং বাকি দোয়া-দরুদ অনুচ্চ স্বরে পড়বে। মুক্তাদিরা সবই অনুচ্চ স্বরে করবে। (আবু দাউদ: ২৭৮৪)
চতুর্থ তাকবিরের পর সালাম ফিরিয়ে নামাজ শেষ করা। প্রথম তাকবির ছাড়া হাত না ওঠানো। নামাজিদের কাতার তিন, পাঁচ, সাত এভাবে বিজোড় হওয়া। (সুনানে কুবরা: ৭২৩৮, দারাকুতনি: ১৮৫৩)
জানাজার নামাজের ফরজ হলো ২টি। যথা—
- চারটি তাকবির বলা।
- জানাজার নামাজ দাঁড়িয়ে পড়া।
জানাজার নামাজের সুন্নত ৪টি। যথা—
- মৃত ব্যক্তির বুক বরাবর দাঁড়ানো।
- প্রথম তাকবিরের পর সানা পড়া।
এবার চলুন আমরা ধাপে ধাপে জানাযার নামাজের নিয়মটি সুন্দর মত শিখে নিই।
১. প্রথম তাকবিরের পর সানা পড়া।
জানাজার নামাজের সানা সাধারণ নামাজের সানার চেয়ে সামান্য ভিন্ন।
আরবিতে সানা:
سُبْحَا نَكَ اَللَّهُمَّ وَبِحَمْدِكَ وَتَبَارَكَ اسْمُكَ وَتَعَا لَى جَدُّكَ وَجَلَّ ثَنَاءُكَ وَلاَ اِلَهَ غَيْرُكَ
বাংলা উচ্চারণ:
সুবহানাকা আল্লাহুম্মা ওয়া বিহামদিকা, ওয়া তাবারা কাসমুকা ওয়া তায়ালা জাদ্দুকা, ওয়া জাল্লা ছানাউকা ওয়া লা ইলাহা গাইরুকা।
২. দ্বিতীয় তাকবিরের পর দরুদ পড়া।
দরুদ শরীফ:
للَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى اَلِ مُحَمَّدٍ كَمَا صَلَّيْتَ عَلَى اِبْرَا هِيْمَ وَعَلَى اَلِ اِبْرَ اهِيْمَ اِنَّكَ حَمِيْدٌ مَّجِيْدٌ- اَللَّهُمَّ بَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى اَلِ مُحَمَّدٍ كَمَا بَارَكْتَ عَلَى اِبْرَا هِيْمَ وَعَلَى اَلِ اِبْرَا هِيْمَ اِنَّكَ حَمِيْدٌمَّجِيْدٌ
বাংলা উচ্চারণ:
আল্লাহুম্মা সাল্লিআলা মুহাম্মাদি ওয়া আলা আলি মুম্মাদিন কামা সাল্লাইতা আলা ইব্রাহিমা ওয়া আলা আলি ইব্রাহিমা ইন্নাকা হামিদুম্মাজীদ। আল্লাহুম্মা বারিক আলা মুহাম্মাদিন ওয়া আলা আলি মুহাম্মাদিন কামা বারাকতা আলা ইব্রাহিমা ওয়া আলা আলি ইব্রাহিমা ইন্নাকা হামীদুম্মাজীদ।
৩. তৃতীয় তাকবিরের পর দোয়া পড়া।
জানাযার দোয়া:
لَّهُمَّ اغْفِرْلحَيِّنَاوَمَيِّتِنَا وَشَاهِدِنَا وَغَائِبِنَا وَصَغِيْرِنَا وَكَبِيْرِنَا وَذَكَرِنَا وَاُنْثَا نَا اَللَّهُمَّ مَنْ اَحْيَيْتَهُ مِنَّا فَاَحْيِهِ عَلَى الاِسْلاَمِ وَمَنْ تَوَفَّيْتَهُ مِنَّا فَتَوَفَّهُ عَلَى الاْيمَانِ بِرَحْمَتِكَ يَا ارْحَمَ الرَّاحِمِيْنَ
বাংলা উচ্চারণ:
আল্লাহুম্মাগফিরলি হাইয়্যেনা ওয়া মাইয়্যিতিনা ওয়া শাহিদিনা ওয়া গায়িইবিনা ও ছাগীরিনা ও কাবীরিনা ও যাকারিনা ও উনছানা। আল্লাহুম্মা মান আহইয়াইতাহু মিন্না ফাআহয়িহি আলাল ইসলামী ওয়া মান তাওয়াফ ফাইতাহু মিন্না ফাতাওয়াফ ফাহু আলাল ঈমান বেরাহমাতিকা ইয়া আর হামার রাহীমিন।
তবে নাবালক ছেলের ক্ষেত্রে জানাযার দোয়া পড়তে হবে,
اَللَّهُمَّ اجْعَلْهُ لَنَا فَرْطًا وْاَجْعَلْهُ لَنَا اَجْرًا وَذُخْرًا وَاجْعَلْهُ لَنَا شَافِعًا وَمُشَفَّعًا
বাংলা উচ্চারণ:
আল্লাহুম্মাজ আল হুলানা ফারতাও ওয়াজ আল হুলানা আজরাও ওয়া যুখরাঁও ওয়াজ আলহুলানা শাফিয়াও ওয়া মুশাফ্ফায়ান।
নাবালিকা মেয়ের ক্ষেত্রে জানাযার দোয়া পড়তে হবে,
اللَّهُمَّ اجْعَلْهَا لَنَا فَرْطًا وَاجْعَلْهَا لَنَا اَجْرًا وَذُخْرًاوَاجْعَلْهَا لَنَا شَافِعَةً وَمُشَفَّعَة
বাংলা উচ্চারণ:
আল্লাহুম্মাজ আলহা লানা ফারতাও ওয়াজ আলহা লানা আজরাও ওয়া যুখরাও ওয়াজ আলহা লানা শাফিয়াও ওয়া মুশাফ ফায়ান।