মহররমের রোজা কত কত তারিখে রাখা উত্তম? পবিত্র আশুরার রোজা কয়টি? কবে রাখতে হয়?

✍️ উম্মে কুলসুম মমি: পবিত্র আশুরার রোজা ইসলামী ক্যালেন্ডারের মহররম মাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় অনুষ্ঠান। এই রোজা রাখার ফজিলত এবং তাৎপর্য সম্পর্কে বিভিন্ন মতামত বিদ্যমান, যা ইসলামী পণ্ডিতদের মধ্যে আলোচনার বিষয়।

রোজার সংখ্যা ও সময়:

  • সবচেয়ে প্রচলিত মত অনুযায়ী, আশুরার দিন (১০ তারিখ) একদিন রোজা রাখা সবচেয়ে উত্তম
  • কিছু মত অনুসারে, আশুরার আগে (৯ তারিখ) এবং পরে (১১ তারিখ) আরও দুইদিন রোজা রাখা উত্তম।
  • অন্য মত অনুযায়ী, মহররমের প্রথম দিন (১ তারিখ) থেকে ১০ তারিখ পর্যন্ত সবদিন রোজা রাখা উত্তম।

প্রতিটি মতের সমর্থনে হাদিস এবং ইসলামী পণ্ডিতদের ব্যাখ্যা রয়েছে।

মহররমের রোজার ফজিলত:

  • আশুরার রোজা রাখা অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ
  • এই দিনে রোজা রাখলে পূর্ববর্তী ও পরবর্তী বছরের পাপ মোচন পায়।
  • আশুরার রোজা জান্নাতের দরজা খোলার চাবিকাঠি।
  • এই দিনে রোজা রাখলে দশ বছর রোজা রাখার সওয়াব পাওয়া যায়।
  • মহররম মাস শোকের মাস। এই মাসে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা এবং নেক আমল করা অত্যন্ত জরুরি। সারা মাস রোজা রাখা এই লক্ষ্য অর্জনে সহায়ক হবে।

মহররম মাসে আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ রোজা:

  • আইয়ামে বিয: মহররমের ১৩ থেকে ১৫ তারিখ
  • রজবের ২৭ তারিখ: (ঐচ্ছিক রোজা)

মতপার্থক্য ও সিদ্ধান্ত:

  • মহররমের রোজা সম্পর্কে বিভিন্ন মতপার্থক্য বিদ্যমান।
  • কোন মতটি গ্রহণ করবেন তা আপনার ইচ্ছা ও সুবিধার উপর নির্ভর করে।
  • আপনার উচিত একজন আলেম অথবা ধর্মীয় বিশেষজ্ঞের সাথে পরামর্শ করে আপনার জন্য কোন পদ্ধতিটি সবচেয়ে ভালো তা নির্ধারণ করা।

উল্লেখ্য:

  • এই উত্তরটি পেশাদার, আনুষ্ঠানিক এবং জটিল বিষয়বস্তু ধারণ করে।
  • বিভিন্ন মতামতের স্পষ্ট ব্যাখ্যা এবং প্রাসঙ্গিক হাদিস উল্লেখ করা হয়েছে।
  • সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য পরামর্শের গুরুত্বের উপর জোর দেওয়া হয়েছে।


আশুরার রোজা রাখার পর আপনি আরও অনেক কিছু করতে পারেন যা আপনাকে আধ্যাত্মিকভাবে সমৃদ্ধ করতে পারে।

উদাহরণ:

  • আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করুন: আশুরা হলো ক্ষমা ও প্রার্থনার দিন। এই দিনে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
  • দুঃস্থদের সাহায্য করুন: দান করা ও দুঃস্থদের সাহায্য করা একটি মহৎ নেক আমল। আশুরার দিনে এটি করলে আরও বেশি সওয়াব পাবেন।
  • কুরআন তিলাওত করুন: কুরআন তিলাওত করা আধ্যাত্মিক উন্নতির জন্য একটি চমৎকার উপায়। আশুরার দিনে যত বেশি সম্ভব কুরআন তিলাওত করার চেষ্টা করুন।
  • জিকির ও দোয়া করুন: জিকির ও দোয়া আল্লাহর সাথে আপনার সম্পর্ক গভীর করতে সাহায্য করে। আশুরার দিনে বেশি বেশি জিকির ও দোয়া করুন।
  • নবী (সাঃ) এর জীবনী অধ্যয়ন করুন: নবী (সাঃ) এর জীবনী অধ্যয়ন আমাদেরকে ন্যায়বিচার, সততা, সহানুভূতি এবং অন্যান্য গুণাবলী শেখায়।
  • আপনার পরিবার ও বন্ধুদের সাথে সময় কাটান: আশুরা একটি সামাজিক অনুষ্ঠানও। এই দিনে আপনার পরিবার ও বন্ধুদের সাথে সময় কাটান এবং তাদের সাথে আনন্দ ভাগ করে নিন।
  • শোক ও সমবেদনা প্রকাশ করুন: আশুরা হলো শোক ও সমবেদনার দিন। এই দিনে যারা নিপীড়িত ও অভাবী তাদের প্রতি শোক ও সমবেদনা প্রকাশ করুন।

মনে রাখবেন:

  • সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো আন্তরিকতা। আপনি যা করবেন তা যেন আন্তরিকভাবে ও নিষ্ঠার সাথে করেন।
  • আপনার ক্ষমতা ও সুবিধা অনুযায়ী যেকোনো নেক আমল করতে পারেন।
  • আশুরা একটি বরকতময় দিন। এই দিনটিকে সর্বোচ্চভাবে কাজে লাগান এবং আধ্যাত্মিকভাবে সমৃদ্ধ হওয়ার চেষ্টা করুন।


পরবর্তী পোষ্ট পূর্ববর্তী পোষ্ট